রাজনীতির দুনিয়ায় ডাঃ মাহাথির এক কিংবদন্তী ও বিচক্ষন নেতা। পৃথিবীর বুকে মালয়েশিয়ার অস্তিত্ব যতদিন থাকবে, ততদিন মাহাথিরের নাম সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়েই থাকবে।
মাহাথিরের জন্ম
ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদ ১৯২৫ সালে মালয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এ্যালোর সেটর-এ এক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ ইস্কান্দারের নয় সন্তানের মধ্যে মাহাথির ছিলেন সবার ছোট। মাহাথিরের পিতা একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন এবং পরবর্তীকালে একজন সরকারি অডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। তার মা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন এবং মাহাথিরকে বাসায় পবিত্র কোরআন শিক্ষা দিতেন। উল্লেখ্য, তার পিতা ছিলেন অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ মানুষ। পিতার কাছ থেকে মাহাথির এ গুণটি পেয়েছেন। ছোটবেলা থেকেই শৃঙ্খল জীবন পালন করেছেন মাহাথির।
হয়তো অনেক বাঙ্গালী মাহাথির সম্বন্ধে একটি চমকপ্রদ তথ্য জানেন না। আর সেটা হচ্ছে, চট্টগ্রাম জেলার উত্তরাংশে রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাইগামী সড়কের সামান্য পূর্বে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম মরিয়ম নগর। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ গ্রামের এক যুবক ব্রিটিশ শাসিত মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি ছিলেন জাহাজের নাবিক। মালয়েশিয়ায় আলোর সেতার গিয়ে এক মালয় রমনীর সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরেই জন্ম নেয় মোহাম্মদ ইস্কান্দার। আর এই মোহাম্মদ ইস্কান্দারের ছেলে সন্তান হিসেবে জন্ম নেন মাহাথির। সে কারনেই নিঃসন্দেহে বলাই যায় যে, আমাদের দেশই মাহাথিরের পূর্বপুরুষের জন্মস্থান।
মাহাথির থেকে ড. মাহাথির
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মাহাথির মনে প্রানে খুব অনুভব করতে থাকেন যে, সমাজের জন্য কিছু করতে হবে। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, এই সমাজের জন্য যদি কিছু করতেই হয়, তবে তাকে আইনবিদ অথবা ডাক্তার হতে হবে। মেধাবী ছাত্র মাহাথির খুব সহজেই বৃত্তি পেয়ে যান। মাহাথিরের প্রথম পছন্দ আইন হলেও সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ডাক্তার হওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। ফলে মাহাথির সিঙ্গাপুরের কিং অ্যাডওয়ার্ড সেভেন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন । উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে সিঙ্গাপুরের মেডিকেল কলেজে মাহাথিসহ মাত্র সাতজন মালয় শিক্ষার্থী ছিলেন। পরবর্তীতে এক সময় মেধাবী মাহাথির পড়াশোনা শেষ করে ফিরে আসেন নিজ দেশ মালয়েশিয়ায়।
পরিবার
সিঙ্গাপুরে পড়ার সময় সিথি হাসমা মোঃ আলীর সাথে মাহাথিরের পরিচয় হয়। সিথি হাসমা তখন দ্বিতীয় মালয় মহিলা হিসেবে সিঙ্গাপুরে বৃত্তি নিয়ে একই কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্র পড়ছিলেন। পরবর্তীতে মাহাথির ও সিথি হাসমা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মোট সাত জন সন্তান আছে, এর মধ্যে আবার তিন জনকে তারা দত্তক নিয়েছিলেন।
কর্মজীবন এবং রাজনীতি
সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে এসে ১৯৫৩ সালে মাহাথির একজন চিকিৎসক হিসেবে চাকুরীতে যোগ দেন। মালয়েশিয়ার স্বাধীনতার ঠিক পূর্বে তিনি সরকারি চাকুরী ছেড়ে নিজ শহর এ্যালোর সেটরে ‘মাহা ক্লিনিক’ নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের চালু করেন। তিনি রোগী দেখতে রোগীদের বাড়িতে যেতেন এবং ক্লিনিকে মাঝে মাঝে ছোটখাটো অস্ত্রপচার করতেন। চিকিৎসার ব্যাপারে তিনি একবার ‘দ্যা ইকোনমিষ্ট’ পত্রিকাতে বলেছিলেন, “চিকিৎসা বিদ্যায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকের জন্য রাজনীতি একটি ভালো পেশা। একজন ডাক্তার রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, ল্যাব পরীক্ষা করেন এবং চূড়ান্তভাবে রোগ নির্ণয় করেন। এ প্রক্রিয়াটি রাজনীতির মতই।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে মন্ত্রী হবার আগ পর্যন্ত তিনি চিকিৎসা পেশা অব্যাহত রেখেছিলেন। এর আগে ১৯৬৯ সালের ৩০শে মে কুয়ালালামপুরে চীনা ও মালয় জাতির মধ্যে তুমুল দাঙ্গার জন্য মাহাথির ইউএমএনও নেতৃত্বকে দোষারোপ করে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্কু আব্দুর রহমানকে খুব কঠিন ভাষায় একটি চিঠি লেখেন ও প্রধানমন্ত্রী টুঙ্কুকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন। এ সমালোচনা পার্টি নেতৃবৃন্দদের দলীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মাহাথিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
কিশোর বয়সে রাজনীতি
মাহাথিরের বয়স যখন কুড়ি বছরের একটু বেশি তখন তিনি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। সহপাঠীদের একত্র করে তিনি গোপনে ‘মালয়ান ইউনিয়ন’ প্রস্তাবের বিরুদ্ধচারণ শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত জাপানীরা চলে যাবার পূর্বে তৎকালীন মালয়েশিয়াকে তারা থাই সরকারের শাসনাধীনে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা আবার ফিরে আসে এবং ‘মালয়ান ইউনিয়ন’ প্রতিষ্ঠা করে। মালয়ান ইউনিয়ন সত্যিকার অর্থে সম্পূর্ণ উপনিবেশ ছিল। মাহাথির ও তার বন্ধুরা তখন রাতের অন্ধকারে সারা শহরে রাজনৈতিক বাণী সম্বলিত পোষ্টার লাগাতেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সীমিত, ‘মালয়ান ইউনিয়ন’ প্রস্তাবের সমাপ্তি এবং প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা ফিরে পাওয়া। সাইকেল চালিয়ে তারা সমগ্র প্রদেশ ঘুরে ঘুরে জনগনকে ব্রিটিশ বিরোধী হিসেবে সংঘটিত ও সক্রিয় করার কাজে ব্যস্ত থাকতেন। সংগঠনে মাহাথির সাধারণত সম্পাদক বা দ্বিতীয় অবস্থানটা বেছে নিতেন, কারণ দ্বিতীয় ব্যক্তিকেই বেশী সাংগঠনিক কাজ করতে হয় ও অন্য দলগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়।
মাহাথির প্রথম কেদাহ মালয় যুব ইউনিয়ন এবং পরে কেদাহ মালয় ইউনিয়ন নামে রাজনৈতিক দল সংগঠিত করেন যা পরবর্তিতে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন বা ইউএমএনও হিসেবে পরিচিত হয়।
সিঙ্গাপুরে ছাত্র রাজনীতি
সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন মাহাথির সেখানের কলেজের মালয় ছাত্রদের নিয়ে ‘মালয় ছাত্র সংগঠন’ গঠন করেন। তবে এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রদের শিক্ষার মান ও ফলাফল উন্নয়ন করা। এর কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না।
প্রধানমন্ত্রী মাহাথির
দল থেকে বহিস্কার হওয়ার পর তিনি আবার চিকিৎসা পেশায় ফিরে যান এবং তিন বছর তিনি নিজ দেশেই রাজনীতি থেকে নির্বাসনে ছিলেন। তবে বন্ধুদের প্রবল ইচ্ছে ও সহযোগিতার কারনে তিনি অবার রাজনীতিতে ফিরে আসেন। ১৯৭২ সালে মাহাথিরকে আবারও দলের সদস্য ও সিনেটর হিসেবে পুনর্বহাল করা হয় এবং ১৯৭৪ সালে এমপি নির্বাচিত হয়ে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ত গ্রহণ করেন।
মাহাথির তার দেশ মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী হয়েই মালয়ীদেরকে কারিগরী জ্ঞানে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নানান ধরনের বস্তুনিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন । মালয়েশিয়াকে সম্পূরণ রুপে বদলে দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা সংস্কার ছিলো মাহাথিরের প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।
১৯৭৫ সালে শিক্ষামন্ত্রী মাহাথির উমনো’র ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আর তুন হোসেন দেশের প্রধানমন্ত্রী হবার ফলে মাহাথির হন উপ-প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তীতে কয়েকবছর পর প্রধানমন্ত্রী তুন হোসেন শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে অবসরে চলে যান। এর ফলে ১৯৮১ সালের ১৬ জুলাই ৫৫ বছর বয়সে মালয়েশিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন ড. মাহাথির মোহাম্মদ।
বিশ্বের ব্যতিক্রমধর্মী প্রধানমন্ত্রী
ডাঃ মাহাথির মোহাম্মদ আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রধান রূপকার হিসেবে বিশ্বময় অত্যন্ত সুপরিচিত। মাহাথিরই পৃথিবীর একমাত্র প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যিনি নিজের নাম লেখা ব্যাজ পরতেন। আধুনিক মালয়েশিয়ার স্বপ্নদ্রষ্টা মাহাথির নিজ দেশ মালয়েশিয়ায় গাড়ি তৈরির সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ নেন। এর ফলশ্রুতিতে জাপানি মিটসুবিশির সহায়তায় মাহাথিরের দেশে প্রোটন সাগা নামের মালয়েশিয়ান গাড়ি তৈরি হয়। মূলত এভাবেই ধীরে ধীরে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি চাঙ্গা হতে শুরু কের মাহাথির আমলে।
প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি দেশের প্রতিটি বিষয় নিয়ে পুনঃপরীক্ষা চালান। তার আমল থেকেই সকল রীতিনীতি, পদ্ধতি, সরকার চালাতে প্রাত্যহিক সব ধরনের কাজ, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা শুরু হয়। তার সরকার সরকারী কর্মকর্তাদের জন্যে ওয়ার্ক-ফ্লো চার্ট আর অফিস ম্যানুয়েল প্রবর্তন করেন। এর অর্থ হচ্ছে ব্যবসা এবং রাজনীতিতে ফুটপাতের লোক থেকে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব পর্যন্ত দেশের জন্য নিজের জন্য কাজ করবে।
মাহাথিরের দক্ষ দেশ চালনার ফলশ্রুতিতে ১৯৯০ সালে মালয়েশিয়া বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৮% ছাড়িয়ে যায়। মাহাথির ১৯৭১ সালে প্রনিত নিউ ইকোনমিক পলিসি (এনইপি) সফল ভাবে বাস্তবায়নে সচেষ্ট হন। এনইপির উদ্দেশ্য ছিলো জাতি নির্বিশেষে দারিদ্র্য বিমোচন এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জাতি পরিচয় মুছে ফেলে নতুন সম্পদ সৃষ্টি করা এবং এর বৃহত্তর অংশ দরিদ্রদের জন্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে সম্পদের পুনঃবন্টনের চেষ্টা করা। দারিদ্র্য বিমোচন বহুলাংশে অর্জিত হবার মধ্য দিয়ে ১৯৯১ সালে বিশ বছর মেয়াদি এই এনইপি শেষ। ধীরে ধীরে একটি সফলতম পর্যায়ে এসে সমৃদ্ধিময় মালয়েশিয়া বিভিন্ন জাতির সাথে সুসম্পর্ক রাখার মধ্য দিয়ে একটি জাতিতে পরিনত হয়, যা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য ভীষন ঈর্ষনীয় এবং আন্যান্য দেশের জন্যে খুবই শিক্ষনীয় বটে। এরপর মাহাথির শাসনামলে বিশ বছর মেয়াদি এনইপি শেষ হবার পর পরবর্তীতে দশ বছর মেয়াদি ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট পলিসি বা এনডিপি প্রনয়ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
সেই বিখ্যাত উক্তি
ইন্দোনেশিয়ার প্রথম প্রেসিডেন্ট সুকর্ণ বলেছিলেন, ‘আমাকে দশজন যুবক দাও, তাহলে আমি সারা বিশ্বকে তোলপাড় করে দেব’। কিন্তু বিচক্ষন মাহাথির বলেছিলেন, ‘ আমাকে দশজন যুবক দেওয়া হলে আমি মালয়ীদের সাথে নিয়ে এই বিশ্বটা জয় করে ফেলবো।’
যেই কথা সেই কাজ। মালয়েশিয়ার নতুন প্রজন্মকে তিনি স্বদেশপ্রেমে এমনভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন যে, তারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
ধর্মীয় চেতনায় মাহাথির
মাহাথিরের পরিবার তাকে ইসলামের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে শিক্ষা দেয়, কিন্তু তাদের কোন রূপ গোঁড়ামি ছিল না। ইসলাম সম্পর্কে “এ নিউ ডিল ফর এশিয়া” গ্রন্থে মাহাথির বলেন, ” ইসলাম ধর্ম আমাদের জীবনের অংশ। একে পরিত্যাগ করার কোন কারণ নেই। সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হল ধর্ম কখনই অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বাধা হতে পারে না। ইসলামের শিক্ষা সমসাময়িক সময়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে নিতে হবে। ইসলাম শুধু মাত্র সপ্তম শতাব্দীর ধর্ম নয়। ইসলাম অবশ্যই সর্বকালের ধর্ম।”
অবসরে জীবনে মালয়েশিয়ার মাহাথির
দীর্ঘ ২২ বছর একটানা ক্ষমতায় থাকার পর ২০০৩ সালের ৩১ অক্টোবর মাসে ৭৭ বছর বয়সে ড. মাহাথির বিন মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে রাজনীতি থেকে বিদায় নেন। তবে পৃথিবীর বুকে রাজনীতির ইতিহাসে তার এই বিদায় ছিল অত্যন্ত ব্যতিক্রমী। এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর বাস্তবতায় দেখা যায়, নেতা-নেত্রীদের মৃত্যু, হত্যা, নির্বাচনে পরাজয় কিংবা কোনো বিদ্রোহ-বিক্ষোভের মধ্যে দিয়েই অবসান ঘটে প্রতিটি নেতা-নেত্রীদের রাজনীতি ও ক্ষমতার । কিন্তু মাহাথির নতুন নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্যে রাজনীতি ও ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন। আর চিরতরের জন্যে পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখেন। Md.Mahbub Ratul
Jagannath University
https://www.facebook.com/akla.pathik11
No comments:
Post a Comment
thank you