সমসাময়িক যুগে ইজতিহাদ এর প্রয়োজনীয়তা
ইজতিহাদের সংজ্ঞা: শরয়ী আহকাম থেকে জন অনুসন্ধানের জন্য সম্পূর্ণ শক্তি এমনভাবে ব্যয় করে দেয়া যে, নিজের মধ্যেই তার থেকেও আরো বেশি চেষ্টা করার ক্ষেত্রে অপারগতা অনুভব হয়।এই পূর্ণ সংজ্ঞা থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সাব্যস্ত হয়। ১। এমনভাবে পূর্ণ শক্তি ব্যয় করা যে নিজের মধ্যেই অক্ষমতা অনুভব হয় এবং এর দ্বারা সামান্য কোন চিন্তা-ভাবনা বের হয়ে যায়।
২। জন (অস্পটতা) এর উল্লেখ করার দ্বারা কতয়ী বা অকাট্য বিষয়সমূহ বের হয়ে গেছে। অর্থাৎ ইজতেহাদ কেবলমাত্র জন্নী দলীল-প্রমাণের মধ্যে হতে পারে। এর দ্বারা আকীদা সংশ্লিষ্ট বিষয়ও বের হয়ে যায়। কেননা আকীদার মধ্যে জন্নী দলীলের কোন অবকাশ নেই। বরং এক্ষেত্রে কেবলমাত্র কতয়ী বা অকাট্য দলীলই গ্রহণযোগ্য হয়। ৩। শরয়ী আহকাম বলার দ্বারা কোন চিন্তাপ্রসূত বা আলমের স্বত্ত্বাগত রায় বা বক্তব্য এই মুয়ামালার (মামলার) বাইরে। অন্য কথায় কোন শরয়ী দলীল ব্যতীত যে কারোই রায় হোক না কেন, ইজতিহাদের মধ্যে তার কোন স্থান নেই।
ইজতিহাদ: ইজতিহাদের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে চেষ্ট বা পরিশ্রম করা। আর ফীক শাস্ত্রের দৃষ্টিতে শরিয়তী উৎস থেকে দলিল প্রমান সহ শরিয়তী বিষয় খুজে বের করা। আর যে ব্যক্তি উক্ত কাজের ব্যাপারে বিশেষ পারদর্শিতা রাখে অর্থাৎ ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রাখে তাকে মুজতাহিদ বলা হয়।
ইজতিহাদের দলীল-প্রমাণ: ইজতিহাদ ফরজে কিফায়া। কেননা এটি ছাড়া জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে অবগত হওয়া যায় না। আর আল্লাহর হুকুমের সম্পর্কে অবগত হওয়া ব্যতীত তার উপর আমল করাটাও অসম্ভব। সুতরাং এই বিষয়টাও নাজায়েজ যে নতুন কোন অবস্থা সামনে আসলো বা কোন ঘটনা সংঘটিত হলো কিন্তু তার শরয়ী হুকুম না জানার কারণে তার উপর আমল করা গেল না। কেননা, মুসলমানদের উপর এ বিষয়টি আবশ্যক যে, তারা জীবনের সকল কার্যাবলী শরীয়া অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবে। একারণেই জীবনে নতুন নতুন বিষয়াবলীর শরয়ী আহকাম খুঁজে বের করার জন্য প্রত্যেক জমানায় মুজতাহিদ থাকা আবশ্যক। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. কে যখন মহানবী সা. কাজী নিয়োগ করে ইয়ামানে প্রেরণ করেছিলেন তখন তিনি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে মুয়াজ তুমি লোকদের মাঝে কি দিয়ে ফায়সালা ও মিমাংসা করবে? হযরত মুয়াজ রা. বলেছিলেন, মহান আল্লাহর কিতাব কুরআন দ্বারা। এরপর রাসূল স. আবার জিজ্ঞেস করলেন, যদি কোন বিষয় কুরআনে না পাও তবে কি দিয়ে ফায়সালা করবে? মুয়াজ রা. বললেন, তাহলে আল্লাহর প্রেরিত রাসূলের সুন্নাহ দ্বারা ফায়সালা করবো। মহানবী সা. আবারও জিজ্ঞেস করলেন, যদি এর মাঝেও সমাধান না পাও? তখন হযরত মুয়াজ রা. বললেন, তাহলে আমি আমার বুদ্ধি দ্বারা এগুলোর মধ্যে ইজতিহাদ করে ফায়সালা প্রদান করবো। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, সেই মহান আল্লাহর প্রশংসা যিনি তার রাসূলকে এমন প্রতিনিধি দান করেছেন, যার উপর আল্লাহ এবং তার রাসূল সন্তুষ্ট। (আবূ দাউদ) । অন্য রিওয়ায়াতে আছে- যখন কোন মুজতাহিদ সঠিকভাবে ইজতিহাদ করে ফায়সালা প্রদান করে এবং তার ফায়সালাটি সঠিক হয় তাহলে তার জন্য দু’টি সওয়াব। আর যখন তার ফায়সালা ভুল হবে তখন তার জন্য একটি সওয়াব। (বুখারী ও মুসলিম)এছাড়াও ইজতিহাদের উপর সাহাবায়ে কিরামের ইজমা প্রতিষ্ঠিত আছে। কেননা, তারা নিজেরা অনেক ক্ষেত্রেই অধিকহারে ইজতিহাদ করেছিলেন।
উদাহরণ: মহিলাদের মজলিস, উম্মতের সদস্য হওয়ার বৈধতা, ওকালাতের (প্রতিনিধির) হুকুমের এই মাসআলার উপর সমতাবিধানের দ্বারা সাব্যস্ত। এটা এজন্য যে ওকালাত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, কারো কোন মুয়ামালার (মামলার) মধ্যে প্রতিনিধিত্ব করা। আর মজলিসে সদস্যের বাস্তবতাও হলো জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা। সুতরাং যেহেতু মহিলারা কাউকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে উকীল নিযুক্ত করতে পারেন একইভাবে তারা কারো উকীল হতেও পারবেন। আর এর দ্বারা তাদের মজলিসে উম্মতের সদস্য হওয়ার বৈধতাও প্রমাণিত হয়। এই ধারাবাহিকতাকে ইজতিহাদ বলা হয় না, বরং এটি কাযা। অর্থাৎ এমন একটি মাসআলা যার উপর বিদ্যমান হুকুমকে সমতাবিধান করা হয়েছে। ইজতিহাদের শর্তাবলী :১। আরবী ভাষা জ্ঞান : যেহেতু শরয়ী নুসূসসমূহ আরবী ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর শরয়ী হুকুমসমূহ এই নুসূস থেকেই বের করা হয়েছে। এজন্য এটা পরিষ্কার বিষয় যে, আরবী ভাষায় এই পরিমাণ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, যাতে করে শরয়ী চেতনাকে খুব ভালোভাবে এবং সার্বিকভাবে অনুধাবন করা যায়। অর্থাৎ খেতাবের মধ্যে শব্দসমূহের আভিধানিক অর্থ, কথার ধরণ, নাহু এবং সরফ এর কায়দাসমূহ, খাস ও আম, মতলক ও মুকাইয়াদ, বয়ান ও মুবাইয়ান, মুজমাল ও তাফসীল, হাকীকত ও মাজায, আমর ও নাহী, নাসেখ ও মানসুখ, হুরুফ ও আলফাজের প্রকারসমূহ, আজনাসে কালাম, দালালতে আলফাজ ইত্যাদি।
২। শরয়ী ইলমের জ্ঞান :দলীল-প্রমাণাদী, শরয়ী হুকুম এবং তার প্রকারভেদ, কিয়াস ও ইল্লত, জমা ও তারজীহ এর প্রকার, জরাহ এবং তাদীলের ইলম, আসবাবে নুযূল, সুন্নাহ্ এবং তার প্রকারসমূহের জ্ঞান ইত্যাদি।
মুজতাহিদের প্রকারভেদ: মুজতাহিদ তিন প্রকার। ১. মুজতাহিদে মাসআলা ২. মুজতাহিদে মাযহাব ৩. মুজতাহিদে মুতলাক ১। মুজতাহিদে মাসআলা:যারা কতিপয় মাসআলা সম্পর্কে ইজতিহাদ করলো। তার জন্য কেবল সেই মাসআলা এবং সে সম্পর্কিত আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থের অবগতি প্রয়োজন। ২। মুজতাহিদে মাযহাব:যারা ইজতিহাদের তরীকা বা উসূলের মধ্যে স্বীয় ইমামের অনুসরণ করেন। কিন্তু শাখাগত বিষয়ে সেই সকল উসূলের আলোকে নিজেও কোন হুকুম-আহকাম ইসতিম্বাত করেন। এছাড়াও তাকে স্বীয় মাযহাবের সকল আহকাম, তার প্রমাণাদি এবং তার দ্বারা ইসতিম্বাতের কাইফিয়্যাত সম্পর্কেও অবগত থাকতে হবে। ৩। মুজতাহিদে মুতলাক: যারা ইসলামী শরীয়তের উপর ব্যাপকভাবে একাধিক বিভিন্ন মাসআলার মধ্যে ইজতিহাদ করতে সক্ষম হন এবং তারা নিজেদের উসূলও নিজেরাই নির্দিষ্ট করে নিতে পারেন। ইসলাম ধর্মে যুগোপযোগী ইজতিহাদ প্রয়োজন: সমস্যার সমাধানে সর্বাঙ্গীণ প্রচেষ্টার নাম হচ্ছে ইজতিহাদ। ইসলামী পরিভাষায় শরিয়তের কোনো নির্দেশ সম্পর্কে সুষ্ঠু জ্ঞান বা সমাধান লাভের উদ্দেশ্যে সর্বাঙ্গীণ প্রচেষ্টা বা সাধনার নাম ইজতিহাদ। পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশাবলি রয়েছে। পবিত্র কোরআন হচ্ছে জীবন দর্শন, আর এ জীবন দর্শন থেকে যুগোপযোগী জীবন বিধান প্রদান করেন নবী-রাসুলরা এবং পরবর্তীতে আল্লাহ ও রাসুল (সা.) কর্তৃক মনোনীত উলিল আমররা । রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর পরই সাহাবাদের মধ্যে ইজতিহাদের প্রচলন শুরু হয়। হজরত ওমর একশতেরও বেশি শরিয়তি আইন প্রবর্তন করেছেন, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জমানায় ছিল না। পবিত্র কোরআনে ফরজ, ওয়াজিব এবং মোবাহ তিন ধরনের নির্দেশাবলি বিদ্যমান। যেমন,মোতা বিবাহ, একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করা এবং দাসপ্রথা ইত্যাদি মোবাহ বিধানের অন্তর্ভুক্ত। এসব বিধানের অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল তৎকালীন আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে। হজরত ওমর (রা) বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে মোতা বিবাহ রদ করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত হয়েছিল। একাধিক স্ত্রী গ্রহণের ব্যাপারে অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে অন্যতম কারণটি ছিল যুদ্ধবিগ্রহে পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া এবং নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। নারীদের পুনর্বাসন ও সংস্থাপনের জন্য শর্তসাপেক্ষে পুরুষদের একাধিক বিয়ে করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল, যার প্রয়োজন এখন আর নেই। দাস প্রথাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিরুৎসাহিত করেছিলেন। ফলে দাস প্রথাও যুগের প্রয়োজনে স্বাভাবিকভাবে রহিত হয়ে গেছে।
'ইজতিহাদ' শব্দটি আরবি 'জাহদ' হতে উদ্ভূত এবং এতে সর্বাধিক পরিমাণে সর্বোত্তম সামর্থ্য অনুযায়ী প্রচেষ্টা চালানোকে বোঝায়। কোরআন ও সুন্নাহ ইজতিহাদের মূল ভিত্তি। ইজতিহাদের ফলাফল কোরআন ও সুন্নাহর মৌলিক আদর্শের পরিপন্থী হতে পারে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সুন্নাহর মাধ্যমে যে বিধানগুলো আমাদের দিয়েছেন, তা তৎকালীন সময়োপযোগী বিধান। মূল ভাবধারাক ঠিক রেখে বিধানগুলো বর্তমান যুগোপযোগী হতে হবে এবং এটাই স্বাভাবিক। হিজরির দ্বিতীয় শতকে আইয়ামে দ্বীনদের কর্তৃক ইজতিহাদের মাধ্যমে অনেক ইসলামী আইন প্রয়োগ করা হয়েছে, যেগুলোর ওপর আজ ধর্মের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ইজতিহাদ সেখানে থমকে দাঁড়িয়ে আছে। অতঃপর ইজতিহাদের দ্বার রুদ্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেই মধ্যযুগীয় ইজতিহাদের ওপরই এখনো আমাদের নির্ভর করতে হয় এবং বলা হয়ে থাকে বর্তমানে ইজতিহাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই অথবা সে রকম যোগ্য ব্যক্তি আর কখনো আসা সম্ভব নয়। এ কথাগুলো আহম্মকি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উন্নতিক্ষণে এসেও যদি আমাদের ওই সাম্রাজ্যবাদী স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠীর অনুমোদিত মধ্যযুগীয় ফতোয়া বা ইজতিহাদের ওপর নির্ভর করে চলতে হয়, তা হলে ইসলামের জন্য সেটি হবে আত্মঘাতী। ড. ইকবাল ইজতিহাদের পথকে রুদ্ধ করায় অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ইসলামের যুক্তিবাদী মতের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াই হলো ইজতিহাদের পতনের কারণ। আধুনিক দৃষ্টিসম্পন্ন ও যুক্তিবাদীরা তাঁদের যুগোপযোগী চিন্তাধারা, মতামতের কারণে রক্ষণশীলদের মনে সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি করেছিলেন। স্বৈরাচারী রাজশক্তি ইসলামী চিন্তাধারার নবজাগরণে শঙ্কিত ও ভীতসন্তস্ত্র হয়ে পড়লো। তারা ইসলামের তথাকথিত পবিত্রতা ও অখণ্ডতাকে রক্ষার অজুহাত ইজতিহাদ ও সব ধরনের নতুনত্বের প্রবর্তনকে নাকচ এবং নিষিদ্ধ করে দেয়। এ কাজটি করা হয় শরিয়ত রক্ষার দাবি নিয়ে। চার মজহাবের কিছু দালালশ্রেণীর পণ্ডিত দ্বারা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এমন এক ব্যবহারিক ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন করা হলো, যাতে তাদের অনৈসলামিকভাবে ক্ষমতা দখল ও রাজ্য পরিচালনায় কোনো বাধাপ্রাপ্ত না হয়। মূলত চার মজহাবের সম্মানিত ইমানদাররা যুগের প্রয়োজনে ইজতিহাদ করেছিলেন সত্যি, তবে তাঁদের কেউ ব্যক্তিগত নামে মজহাব সৃষ্টি করে উম্মাহকে বিভক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে যাননি। পরবর্তী সময়ে তাঁদেরই কথিত আব্বাসীয় রাজশক্তির পদলেহনকারী কিছু শিষ্য পণ্ডিতব্যক্তি মাধ্যমে ইমামদের নামে মজহাব সৃষ্টি করে উম্মাহকে বিভিন্ন মজহাবে বিভক্ত করে স্বৈরাচারী রাজশক্তি উরারফব ধহফ জঁষব পলিসির বাস্তবায়ন করে এবং আইন করে পরে ইজতিহাদ বা গবেষণার কাজ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। অনেকের মতে মধ্যযুগের পর ইসলামের ইজতিহাদের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে আর কোনো ইজতিহাদ বা গবেষণার প্রয়োজন ও সুযোগ নেই। মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণা ও প্রবর্তিত বিধি-বিধানের ওপর কিয়ামত পর্যন্ত উম্মাহকে চলতে হবে। এ ধরনের একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত মুসলিম উম্মাহকে আধুনিক যুগোপযোগী মুক্তচিন্তার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত করে তোলে। সুতরাং যুগের প্রয়োজনে জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়গুলোর আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত ইজতিহাদ বা গবেষণার একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় ইসলাম ধর্ম অন্য অনেক ধর্মের মতো তার ব্যবহারিক কার্যকারিতা হারিয়ে মুখথুবড়ে পড়বে এবং শুধু একটি নিছক আনুষ্ঠানিক ধর্মে পরিণত হবে। পবিত্র কোরআন বলছে, তারা কী কোরআন নিয়ে চিন্তা করে না, নাকি তাদের অন্তরে পর্দা পড়ে গেছে।
notes is collect from>https://www.facebook.com/akla.pathik11
ইজতিহাদের সংজ্ঞা: শরয়ী আহকাম থেকে জন অনুসন্ধানের জন্য সম্পূর্ণ শক্তি এমনভাবে ব্যয় করে দেয়া যে, নিজের মধ্যেই তার থেকেও আরো বেশি চেষ্টা করার ক্ষেত্রে অপারগতা অনুভব হয়।এই পূর্ণ সংজ্ঞা থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সাব্যস্ত হয়। ১। এমনভাবে পূর্ণ শক্তি ব্যয় করা যে নিজের মধ্যেই অক্ষমতা অনুভব হয় এবং এর দ্বারা সামান্য কোন চিন্তা-ভাবনা বের হয়ে যায়।
২। জন (অস্পটতা) এর উল্লেখ করার দ্বারা কতয়ী বা অকাট্য বিষয়সমূহ বের হয়ে গেছে। অর্থাৎ ইজতেহাদ কেবলমাত্র জন্নী দলীল-প্রমাণের মধ্যে হতে পারে। এর দ্বারা আকীদা সংশ্লিষ্ট বিষয়ও বের হয়ে যায়। কেননা আকীদার মধ্যে জন্নী দলীলের কোন অবকাশ নেই। বরং এক্ষেত্রে কেবলমাত্র কতয়ী বা অকাট্য দলীলই গ্রহণযোগ্য হয়। ৩। শরয়ী আহকাম বলার দ্বারা কোন চিন্তাপ্রসূত বা আলমের স্বত্ত্বাগত রায় বা বক্তব্য এই মুয়ামালার (মামলার) বাইরে। অন্য কথায় কোন শরয়ী দলীল ব্যতীত যে কারোই রায় হোক না কেন, ইজতিহাদের মধ্যে তার কোন স্থান নেই।
ইজতিহাদ: ইজতিহাদের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে চেষ্ট বা পরিশ্রম করা। আর ফীক শাস্ত্রের দৃষ্টিতে শরিয়তী উৎস থেকে দলিল প্রমান সহ শরিয়তী বিষয় খুজে বের করা। আর যে ব্যক্তি উক্ত কাজের ব্যাপারে বিশেষ পারদর্শিতা রাখে অর্থাৎ ইজতিহাদ করার যোগ্যতা রাখে তাকে মুজতাহিদ বলা হয়।
ইজতিহাদের দলীল-প্রমাণ: ইজতিহাদ ফরজে কিফায়া। কেননা এটি ছাড়া জীবনের বিভিন্ন বিষয়ের ক্ষেত্রে আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে অবগত হওয়া যায় না। আর আল্লাহর হুকুমের সম্পর্কে অবগত হওয়া ব্যতীত তার উপর আমল করাটাও অসম্ভব। সুতরাং এই বিষয়টাও নাজায়েজ যে নতুন কোন অবস্থা সামনে আসলো বা কোন ঘটনা সংঘটিত হলো কিন্তু তার শরয়ী হুকুম না জানার কারণে তার উপর আমল করা গেল না। কেননা, মুসলমানদের উপর এ বিষয়টি আবশ্যক যে, তারা জীবনের সকল কার্যাবলী শরীয়া অনুযায়ী বাস্তবায়ন করবে। একারণেই জীবনে নতুন নতুন বিষয়াবলীর শরয়ী আহকাম খুঁজে বের করার জন্য প্রত্যেক জমানায় মুজতাহিদ থাকা আবশ্যক। হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. কে যখন মহানবী সা. কাজী নিয়োগ করে ইয়ামানে প্রেরণ করেছিলেন তখন তিনি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে মুয়াজ তুমি লোকদের মাঝে কি দিয়ে ফায়সালা ও মিমাংসা করবে? হযরত মুয়াজ রা. বলেছিলেন, মহান আল্লাহর কিতাব কুরআন দ্বারা। এরপর রাসূল স. আবার জিজ্ঞেস করলেন, যদি কোন বিষয় কুরআনে না পাও তবে কি দিয়ে ফায়সালা করবে? মুয়াজ রা. বললেন, তাহলে আল্লাহর প্রেরিত রাসূলের সুন্নাহ দ্বারা ফায়সালা করবো। মহানবী সা. আবারও জিজ্ঞেস করলেন, যদি এর মাঝেও সমাধান না পাও? তখন হযরত মুয়াজ রা. বললেন, তাহলে আমি আমার বুদ্ধি দ্বারা এগুলোর মধ্যে ইজতিহাদ করে ফায়সালা প্রদান করবো। তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, সেই মহান আল্লাহর প্রশংসা যিনি তার রাসূলকে এমন প্রতিনিধি দান করেছেন, যার উপর আল্লাহ এবং তার রাসূল সন্তুষ্ট। (আবূ দাউদ) । অন্য রিওয়ায়াতে আছে- যখন কোন মুজতাহিদ সঠিকভাবে ইজতিহাদ করে ফায়সালা প্রদান করে এবং তার ফায়সালাটি সঠিক হয় তাহলে তার জন্য দু’টি সওয়াব। আর যখন তার ফায়সালা ভুল হবে তখন তার জন্য একটি সওয়াব। (বুখারী ও মুসলিম)এছাড়াও ইজতিহাদের উপর সাহাবায়ে কিরামের ইজমা প্রতিষ্ঠিত আছে। কেননা, তারা নিজেরা অনেক ক্ষেত্রেই অধিকহারে ইজতিহাদ করেছিলেন।
উদাহরণ: মহিলাদের মজলিস, উম্মতের সদস্য হওয়ার বৈধতা, ওকালাতের (প্রতিনিধির) হুকুমের এই মাসআলার উপর সমতাবিধানের দ্বারা সাব্যস্ত। এটা এজন্য যে ওকালাত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, কারো কোন মুয়ামালার (মামলার) মধ্যে প্রতিনিধিত্ব করা। আর মজলিসে সদস্যের বাস্তবতাও হলো জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা। সুতরাং যেহেতু মহিলারা কাউকে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে উকীল নিযুক্ত করতে পারেন একইভাবে তারা কারো উকীল হতেও পারবেন। আর এর দ্বারা তাদের মজলিসে উম্মতের সদস্য হওয়ার বৈধতাও প্রমাণিত হয়। এই ধারাবাহিকতাকে ইজতিহাদ বলা হয় না, বরং এটি কাযা। অর্থাৎ এমন একটি মাসআলা যার উপর বিদ্যমান হুকুমকে সমতাবিধান করা হয়েছে। ইজতিহাদের শর্তাবলী :১। আরবী ভাষা জ্ঞান : যেহেতু শরয়ী নুসূসসমূহ আরবী ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে। আর শরয়ী হুকুমসমূহ এই নুসূস থেকেই বের করা হয়েছে। এজন্য এটা পরিষ্কার বিষয় যে, আরবী ভাষায় এই পরিমাণ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, যাতে করে শরয়ী চেতনাকে খুব ভালোভাবে এবং সার্বিকভাবে অনুধাবন করা যায়। অর্থাৎ খেতাবের মধ্যে শব্দসমূহের আভিধানিক অর্থ, কথার ধরণ, নাহু এবং সরফ এর কায়দাসমূহ, খাস ও আম, মতলক ও মুকাইয়াদ, বয়ান ও মুবাইয়ান, মুজমাল ও তাফসীল, হাকীকত ও মাজায, আমর ও নাহী, নাসেখ ও মানসুখ, হুরুফ ও আলফাজের প্রকারসমূহ, আজনাসে কালাম, দালালতে আলফাজ ইত্যাদি।
২। শরয়ী ইলমের জ্ঞান :দলীল-প্রমাণাদী, শরয়ী হুকুম এবং তার প্রকারভেদ, কিয়াস ও ইল্লত, জমা ও তারজীহ এর প্রকার, জরাহ এবং তাদীলের ইলম, আসবাবে নুযূল, সুন্নাহ্ এবং তার প্রকারসমূহের জ্ঞান ইত্যাদি।
মুজতাহিদের প্রকারভেদ: মুজতাহিদ তিন প্রকার। ১. মুজতাহিদে মাসআলা ২. মুজতাহিদে মাযহাব ৩. মুজতাহিদে মুতলাক ১। মুজতাহিদে মাসআলা:যারা কতিপয় মাসআলা সম্পর্কে ইজতিহাদ করলো। তার জন্য কেবল সেই মাসআলা এবং সে সম্পর্কিত আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থের অবগতি প্রয়োজন। ২। মুজতাহিদে মাযহাব:যারা ইজতিহাদের তরীকা বা উসূলের মধ্যে স্বীয় ইমামের অনুসরণ করেন। কিন্তু শাখাগত বিষয়ে সেই সকল উসূলের আলোকে নিজেও কোন হুকুম-আহকাম ইসতিম্বাত করেন। এছাড়াও তাকে স্বীয় মাযহাবের সকল আহকাম, তার প্রমাণাদি এবং তার দ্বারা ইসতিম্বাতের কাইফিয়্যাত সম্পর্কেও অবগত থাকতে হবে। ৩। মুজতাহিদে মুতলাক: যারা ইসলামী শরীয়তের উপর ব্যাপকভাবে একাধিক বিভিন্ন মাসআলার মধ্যে ইজতিহাদ করতে সক্ষম হন এবং তারা নিজেদের উসূলও নিজেরাই নির্দিষ্ট করে নিতে পারেন। ইসলাম ধর্মে যুগোপযোগী ইজতিহাদ প্রয়োজন: সমস্যার সমাধানে সর্বাঙ্গীণ প্রচেষ্টার নাম হচ্ছে ইজতিহাদ। ইসলামী পরিভাষায় শরিয়তের কোনো নির্দেশ সম্পর্কে সুষ্ঠু জ্ঞান বা সমাধান লাভের উদ্দেশ্যে সর্বাঙ্গীণ প্রচেষ্টা বা সাধনার নাম ইজতিহাদ। পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশাবলি রয়েছে। পবিত্র কোরআন হচ্ছে জীবন দর্শন, আর এ জীবন দর্শন থেকে যুগোপযোগী জীবন বিধান প্রদান করেন নবী-রাসুলরা এবং পরবর্তীতে আল্লাহ ও রাসুল (সা.) কর্তৃক মনোনীত উলিল আমররা । রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওফাতের পর পরই সাহাবাদের মধ্যে ইজতিহাদের প্রচলন শুরু হয়। হজরত ওমর একশতেরও বেশি শরিয়তি আইন প্রবর্তন করেছেন, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জমানায় ছিল না। পবিত্র কোরআনে ফরজ, ওয়াজিব এবং মোবাহ তিন ধরনের নির্দেশাবলি বিদ্যমান। যেমন,মোতা বিবাহ, একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করা এবং দাসপ্রথা ইত্যাদি মোবাহ বিধানের অন্তর্ভুক্ত। এসব বিধানের অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল তৎকালীন আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে। হজরত ওমর (রা) বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে মোতা বিবাহ রদ করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত হয়েছিল। একাধিক স্ত্রী গ্রহণের ব্যাপারে অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে অন্যতম কারণটি ছিল যুদ্ধবিগ্রহে পুরুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়া এবং নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। নারীদের পুনর্বাসন ও সংস্থাপনের জন্য শর্তসাপেক্ষে পুরুষদের একাধিক বিয়ে করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল, যার প্রয়োজন এখন আর নেই। দাস প্রথাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) নিরুৎসাহিত করেছিলেন। ফলে দাস প্রথাও যুগের প্রয়োজনে স্বাভাবিকভাবে রহিত হয়ে গেছে।
'ইজতিহাদ' শব্দটি আরবি 'জাহদ' হতে উদ্ভূত এবং এতে সর্বাধিক পরিমাণে সর্বোত্তম সামর্থ্য অনুযায়ী প্রচেষ্টা চালানোকে বোঝায়। কোরআন ও সুন্নাহ ইজতিহাদের মূল ভিত্তি। ইজতিহাদের ফলাফল কোরআন ও সুন্নাহর মৌলিক আদর্শের পরিপন্থী হতে পারে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সুন্নাহর মাধ্যমে যে বিধানগুলো আমাদের দিয়েছেন, তা তৎকালীন সময়োপযোগী বিধান। মূল ভাবধারাক ঠিক রেখে বিধানগুলো বর্তমান যুগোপযোগী হতে হবে এবং এটাই স্বাভাবিক। হিজরির দ্বিতীয় শতকে আইয়ামে দ্বীনদের কর্তৃক ইজতিহাদের মাধ্যমে অনেক ইসলামী আইন প্রয়োগ করা হয়েছে, যেগুলোর ওপর আজ ধর্মের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ইজতিহাদ সেখানে থমকে দাঁড়িয়ে আছে। অতঃপর ইজতিহাদের দ্বার রুদ্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেই মধ্যযুগীয় ইজতিহাদের ওপরই এখনো আমাদের নির্ভর করতে হয় এবং বলা হয়ে থাকে বর্তমানে ইজতিহাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই অথবা সে রকম যোগ্য ব্যক্তি আর কখনো আসা সম্ভব নয়। এ কথাগুলো আহম্মকি ছাড়া অন্য কিছু নয়। বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম উন্নতিক্ষণে এসেও যদি আমাদের ওই সাম্রাজ্যবাদী স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠীর অনুমোদিত মধ্যযুগীয় ফতোয়া বা ইজতিহাদের ওপর নির্ভর করে চলতে হয়, তা হলে ইসলামের জন্য সেটি হবে আত্মঘাতী। ড. ইকবাল ইজতিহাদের পথকে রুদ্ধ করায় অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ইসলামের যুক্তিবাদী মতের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াই হলো ইজতিহাদের পতনের কারণ। আধুনিক দৃষ্টিসম্পন্ন ও যুক্তিবাদীরা তাঁদের যুগোপযোগী চিন্তাধারা, মতামতের কারণে রক্ষণশীলদের মনে সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি করেছিলেন। স্বৈরাচারী রাজশক্তি ইসলামী চিন্তাধারার নবজাগরণে শঙ্কিত ও ভীতসন্তস্ত্র হয়ে পড়লো। তারা ইসলামের তথাকথিত পবিত্রতা ও অখণ্ডতাকে রক্ষার অজুহাত ইজতিহাদ ও সব ধরনের নতুনত্বের প্রবর্তনকে নাকচ এবং নিষিদ্ধ করে দেয়। এ কাজটি করা হয় শরিয়ত রক্ষার দাবি নিয়ে। চার মজহাবের কিছু দালালশ্রেণীর পণ্ডিত দ্বারা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এমন এক ব্যবহারিক ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন করা হলো, যাতে তাদের অনৈসলামিকভাবে ক্ষমতা দখল ও রাজ্য পরিচালনায় কোনো বাধাপ্রাপ্ত না হয়। মূলত চার মজহাবের সম্মানিত ইমানদাররা যুগের প্রয়োজনে ইজতিহাদ করেছিলেন সত্যি, তবে তাঁদের কেউ ব্যক্তিগত নামে মজহাব সৃষ্টি করে উম্মাহকে বিভক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে যাননি। পরবর্তী সময়ে তাঁদেরই কথিত আব্বাসীয় রাজশক্তির পদলেহনকারী কিছু শিষ্য পণ্ডিতব্যক্তি মাধ্যমে ইমামদের নামে মজহাব সৃষ্টি করে উম্মাহকে বিভিন্ন মজহাবে বিভক্ত করে স্বৈরাচারী রাজশক্তি উরারফব ধহফ জঁষব পলিসির বাস্তবায়ন করে এবং আইন করে পরে ইজতিহাদ বা গবেষণার কাজ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়। অনেকের মতে মধ্যযুগের পর ইসলামের ইজতিহাদের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে আর কোনো ইজতিহাদ বা গবেষণার প্রয়োজন ও সুযোগ নেই। মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণা ও প্রবর্তিত বিধি-বিধানের ওপর কিয়ামত পর্যন্ত উম্মাহকে চলতে হবে। এ ধরনের একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত মুসলিম উম্মাহকে আধুনিক যুগোপযোগী মুক্তচিন্তার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত করে তোলে। সুতরাং যুগের প্রয়োজনে জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়গুলোর আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত ইজতিহাদ বা গবেষণার একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় ইসলাম ধর্ম অন্য অনেক ধর্মের মতো তার ব্যবহারিক কার্যকারিতা হারিয়ে মুখথুবড়ে পড়বে এবং শুধু একটি নিছক আনুষ্ঠানিক ধর্মে পরিণত হবে। পবিত্র কোরআন বলছে, তারা কী কোরআন নিয়ে চিন্তা করে না, নাকি তাদের অন্তরে পর্দা পড়ে গেছে।
notes is collect from>https://www.facebook.com/akla.pathik11
No comments:
Post a Comment
thank you